মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৩৩ পূর্বাহ্ন
ভয়েস অব বরিশাল ডেস্ক॥ ঝালকাঠিতে করোনা সংকটে কিস্তির টাকা না দিতে পারায় প্রকাশ্যে ঋন গ্রহীতাকে মারধর করে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে । গত বৃহস্পতিবার (২৪ জুন) সন্ধ্যায় ঝালকাঠি শহরের পুরাতন খেয়াঘাটে এ ঘটনা ঘটে। ঝালকাঠিতে করোনা ভাইরাস মহামারির মধ্যেও থেমে নেই বেসরকারি সমবায় সমিতির আওতাধীন কিস্তির টাকা আদায়। আর এ কিস্তির টাকা দিতে না পারায় মজিবর রহমান(৪৫) নামের এক ব্যক্তিকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যা চেষ্টা ও ছিনতাইয়ের অভিযোগ উঠেছে মিলন হাওলাদার(৩৮) ও সুমন মাঝি( ৩৬) নামের দুই এনজিও কর্মীর বিরুদ্ধে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানাযায়, ঝালকাঠি পৌরসভাধীন আশার আলো কৃষি উন্নয়ন সমবায় সমিতি লিমিটেড কতৃক পৌরসভা খেয়াঘাট সংলগ্ন এলাকার মোঃ মজিবর রহমান ঝালকাঠি পূবালী ব্যাংক শাখায় তার ব্যক্তিগত একাউন্টে ব্যবহৃত নিজ স্বাক্ষর সম্বলিত একটি চেক জামানত পূর্বক উক্ত সমবায় সমিতি থেকে চল্লিশ হাজার টাকা ঋন গ্রহন করেন। অভিযোগককারী মজিবর জানান, উক্ত ঋনের টাকা কিস্তির মাধ্যমে পরিশোধ করে আসছি, ঋণ গ্রহনের পর থেকে ৯টি কিস্তি পরিশোধ করা হলে দেশে করোনা ভাইরাস ( কোভিড-১৯) শুরু হলে বাকি কিস্তির টাকা যথাসময়ে পরিশোধ করতে না পারায় উক্ত সমবায় সমিতির পরিচালক মিলন হাওলাদার আমার ব্যক্তিগত মুঠোফোনে বিভিন্ন সময় কিস্তির টাকা পরিশোধ করার জন্য গালাগাল দেয় এবং আমাকে চাপ সৃষ্টি করতে থাকে। গত ২৪জুন সন্ধ্যায় আমার মুঠোফোনে উক্ত সমিতি সদস্য সুমন মাঝি আমাকে পৌর খেয়াঘাট সংলগ্ন রাস্তায় বের হতে বলে। আমি সুমনের কথায় রাস্তায় বের হলে আশার আলো কৃষি উন্নয়ন সমবায় সমিতির পরিচালক মিলন হাওলাদার কোন কথা না বলে কিস্তির টাকা দে, বলে আমার গলা চেপে আমাকে শ্বাসরোধ করে মেরে ফেলার চেষ্টা করে।
তিনি আরো বলেন, আমি কোনমতে আমার গলা থেকে তার হাত সরিয়ে ফেলে চিৎকার করলে তারা দুজনে মিলে আমাকে এলোপাথারী কিলঘুষি মারতে থাকে। এক পর্যায় মিলন তার প্যান্টের পকেট থেকে চাকু বের করে আমার গলায় পোচ দেয়। আমি সরে গেলে সেই পোচ আমার বাম কানের উপর লেগে কাটা যখম হয়। আমাকে মারধর করার ফাঁকে মিলন ও সুমন আমার গলায় থাকা স্বর্নের চেইন, পকেটে থাকা টাকা ও মোবাইল ফোন নিয়ে যায়। এ সময় স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এলে মজিবরকে খুনের ভয় দেখিয়ে মিলন ও সুমন চলে যায়।
এ বিষয় মজিবর রহমানের স্ত্রী জানান, বৃহস্পতিবার মাগরীব নামাজ শেষে আমি তজবী পড়তে ছিলাম হঠাৎ ঘরের বাইরে আমার স্বামীর চিৎকার শুনতে পেয়ে আমি ও আমার ছেলে মেয়ে দৌড়ে গিয়ে দেখি মিলন ও সুমন আমার স্বামীকে মারধর করছে। আমি দৌড়ে গিয়ে আমার স্বামীকে জড়িয়ে ধরে তাদেরকে না মারার জন্য অনুরোধ করলেও তারা মারধর করতে থাকে, আমি বারন করতে গেলে মিলন আমার শরীরেও কিলঘুষি মেরে আঘাত করে।
করোনা মহামারিতে সরকার এনজিও ঋণের কিস্তি পরিশোধ শিথিল করেছে। এমন কি চাপ দিয়ে টাকা আদায় করলে ওই এনজিওর নিবন্ধন বাতিল করবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন। তারপরও মজিবর রহমানের কাছ থেকে জোর করে কিস্তির টাকা আদায় করার চেষ্টা করে মিলন ও সুমন।
এ বিষয় অভিযুক্ত মিলনের ফোনে কল করলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। অপরদিকে সুমনের ফোনে কল দিয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি মারধরের কথা অস্বীকার করে বলেন, মজিবরের সাথে আমাদের বাকবিতন্ডা হয়। এ ব্যাপারে ঝালকাঠি থানার ওসি খলিলুর রহমান বলেন, অভিযোগ অনুযায়ী তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে ।
Leave a Reply